গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য ধরে রাখতে লক্ষ্মীপুরে আয়োজন করা হয়েছে দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী পিঠাপুলির উৎসব। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহনে এলাকাব্যাপী উৎসবটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সরব উপস্থিতে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন লোকারন্য হয়ে উঠে।
মঙ্গলবার (৭ফেব্রুয়ারী) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ মাগুরীতে ড. হাকীম মোঃ ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাকীম কামরুন নাহার হারুন এর নির্দেশনা এবং তত্বাবধানে এ পিঠা উৎসব কলেজ প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয়।
এতে ঐ অঞ্চলের ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৪টি সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়। যাতে ২০টি স্টল নিয়ে বিভিন্ন পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন শিক্ষার্থীবৃন্দ। এতে প্রায় তিন শতাধিক বিভিন্ন প্রকারের পিঠা স্থান পায়।
সকালে রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া।
প্রতিষ্ঠানটির উপদেষ্টা ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা: আশফাকুর রহমান মামুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোছাইন আহমেদ হেলাল, দত্তপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ বোরহান উদ্দিন, হামদর্দ বাংলাদেশের উপ-পরিচালক (বিক্রয়) মোখলেছুর রহমান মারুফ, চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল ওহাব কন্ট্রাক্টার প্রমুখ।
উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা: মো: সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন পিঠা উৎসব কমিটির আহবায়ক ডা: মো: সাইফুল ইসলাম খান, শিক্ষক ডাঃ শরীফ মোল্লাহ, ডাঃ মাহামুদুল হাছান ভূঁইয়া, হাকীম রেহানা আখতার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল হুদা সবুজ, সহ সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠান থেকে রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রতিষ্ঠাতা হামদর্দ এমডি এবং তার পরিবারের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন আয়েশা (রা:) মহিলা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আহমদ উল্যাহ।
পিঠা উৎসবে স্থান পেয়েছে জিরা পিঠা, ভাপা, নকশি, চিতই, পাঠিসাপটা, জামাই বরণ পিঠা, ডাল ও তালের পিঠাসহ তিন শতাধিক পিঠার সমারাহ। উৎসবে ভিড় জমান জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এমন আয়োজনে ধন্যবাদও জানান তারা।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে জমে উঠে পিঠা উৎসব। পিঠা উৎসবে আগত দর্শনার্থীদের তৃষ্ণা নিবারণ ও ক্লান্তি দূর করতে ব্যস্ত দেখা যায় হামদর্দ প্রধান কার্যালয় ও লক্ষ্মীপুর শাখার কর্মকর্তাদের। তাদের স্টল থেকে রূহ আফজার কয়েক প্রকারের শরবত বিতরণ করা হয়। শরবত বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন হামদর্দ বাংলাদেশের উপ-পরিচালক (বিক্রয়) মোখলেছুর রহমান মারুফ।
শিক্ষাঙ্গনে পিঠা উৎসব-২০২৩ইং এ অংশগ্রহণকারীর মধ্য থেকে আয়েশা (রা:) মহিলা কামিল মাদরাসার স্টল সাঈদ উল্ল্যা ভূঁইয়া পিঠাঘর ১ম স্থান অর্জন করেন, যৌথ ভাবে ২য় স্থান অর্জন করেন দত্তপাড়া রামরতন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্ণালী পিঠাঘর ও রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্টল রত্নগর্ভ রওশন জাহান পিঠাঞ্জলি, যৌথ ভাবে ৩য় স্থান অর্জন করেন চৌপল্লী জয়তারা উচ্চ বিদ্যালয়ের স্টল পিঠা বিলাস ও রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজের স্টল পিঠাঞ্জলি এবং শশুর বাড়ির পিঠা।
এছাড়াও উৎসবে অংশগ্রহন করার জন্য বিষেশভাবে পুরস্কৃত করা হয় হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশ এর রূহ আফজা স্টল, আলহাজ্ব হাকীম ড. মোঃ ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া পিঠাঘর, সেচ্ছাসেবী সংগঠন সবুজ বাংলাদেশ, আদর্শ মানব কল্যান সংগঠন-বাংলাদেশ, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ ব্লাড মিশন, মানবতাই ধর্ম সেচ্ছাসেবী সংগঠন কে।
পিঠা উৎসবে অংশগ্রহনকারী সকল স্টলকে সম্মানা স্বারক প্রদান করা হয়।
পিঠা উৎসব কমিটির আহবায়ক ডা: মো: সাইফুল ইসলাম খান জানান, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলে এ ধরনের আয়োজন প্রথম। এমন আয়োজনে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এ আয়োজনে ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৪টি সামাজিক সংগঠন অংশগ্রহন করে। এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।